কতদূর এলে, দাদু?

  • একান্ন বছর!
    এতদূর…
    তুমিতো মহাপ্রাণ মৃত্যুঞ্জয়ী, দাদু।
  • হ্যাঁ, অন্তর্দাহে পুড়ে পুড়ে পবিত্র এই নিসর্গের অস্তিত্ব,
    আরো এগিয়ে যাবো মহাশূন্যের পথে…

আর কতদূর..?

  • এইতো সামনেই পদ্মা, পাড়ি দিলেই বাড়ি।
    পদ্মা এখন আর মনুষ্য গ্রাস করবেনা,
    পদ্মাই ছিলো আমাদের ঠিকানা।
    ত্রিমাত্রিক একান্নবর্তী প্রান্তরে আশ্রিত
    বর্গীরা লুণ্ঠন করেছে আমাদের আত্মা,
    বার বার পদ্মায় বয়ে গেছে ফেনিল রক্তস্রাব
    আমাদের নীরন্ধ্র আকাশজুড়ে আগ্নেয়স্রোত।

আজ তমিস্র রাত ভেঙে চাঁদের নাভি বিচ্ছুরিত
সাদা পালক পদ্মারজলে মোহন ঢেউ খেলে।
আমরা এগিয়ে এসেছি মহাভারত পাড়ি দিয়ে,
উৎকীর্ণ মুক্তির করিডোরে সজীব লতায় রক্তবর্ণ সিঁদুর,
একটি তর্জনীর বিনিময়ে পেয়েছি একটি বাংলাদেশ ।

দাদু, আর পারিনা অনেক হাঁটা হলো

  • আরেকটু, এইতো সামনে সবুজ প্রান্তর
    রত্ন প্রসবিনী আমাদের কামনার বিস্তৃত স্বপ্নাঙন।
    এখানে দ্রোহের উজ্জ্বল পোশাক পরা লক্ষ লক্ষ
    স্বপ্নবান সন্তানেরা শুয়ে আছে,
    মৃত্যুর নীল ঠোঁট স্পর্শ করে ওরা আজ
    বঙ্গোপসাগরে জ্বলজ্বলে সুবর্ণ নক্ষত্ররাজি।
    জয় বাংলা- দুটি শব্দের বিনিময়ে ওরা রক্ষা করেছে মায়ের শরীর
    পরিয়ে দিয়েছে বিজয়মালা।

দাদু, কতক্ষণ আর বাড়ী?

  • মাত্র এক ফাৰ্লং,
    আমরা পৌঁছে যাবো আমাদের বোধের ভেতর
    আকাশছোঁয়া স্বর্গালিপ্ত মুখশ্রী,
    আর একটু হেঁটে গেলেই স্বর্ণকান্তি অবয়ব
    আমাদের ঠিকানা।
    উন্মুক্ত শস্যের দানা, আমাদের সাফল্যের রঙে রাঙা
    অনাবিল প্রহর।

দাদু, এখানে একটু দাড়াই

  • না, আমরা ক্লান্ত নই,
    আমরা অন্তরীক্ষে রোদ্দুরে জ্যোৎস্নার উঠোন
    আমরা হেঁটে যাবো আরেকটু পথ, তারপর ঠিকানা
    রক্তিম সূর্য জেগে আছে সবুজপ্রান্তরজুড়ে,
    আমাদের সীমাহীন বিজয়ের দশদিগন্ত।

Leave a comment

Trending