শোকে নুয়ে আছে বিশ্বাসের পরিধি,
প্রতিশোধের আগুনে পুড়ছে হৃদয়
তবুও মমতায়লীন বিদেহী আত্মার সাথে বিনম্র বিনয়।
উদাসীন নদীরা আজো প্রবাহিত গর্ব ও শোকের আলিঙ্গনে,
কুয়াশার জলজ আবছায় স্পর্ধিত তৃণভূমি
বীর-গাথা ইতিহাস বিচ্ছেদের অপর পৃষ্ঠায়।
তুমি নেই বলে কণ্ঠে ব্যাহত হয় জয় বাংলার সাহসী উচ্চারণ
তোমাকে ঘিরেইতো বাংলার বিস্তৃত আঙিনা
তবুও কেউটেরা আজো বিবস্ত্র করছে তোমার স্বপ্নের জমিন,
আমরা এখনো অনাহুত স্বাধীনতার উত্তরাধিকারী!
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইল জুড়ে নির্ভীক একটি নাম
সে নামের আগে পিছে হাজার সালাম- শেখ মুজিব।
আকাশসম উদারতা চমকে দিয়েছে বিশ্ব মানবপ্রাণ।
সংশয় তোমাকে ছুতে পারেনি কখনো
যেমন, যেদিন ঘিরে রেখেছিলো পাক বাহিনী,
অথবা রাওয়াল পিণ্ডির জেলখানা-
পঞ্চদশ আগস্ট, পঁচাত্তরে;
না, সেদিনওনা-
কালোরাত খামচে ধরেছিলো টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া
বিষণ্নতা ছুঁয়ে আছে উত্তর থেকে দক্ষিণমেরু,
চাঁদ লুকিয়েছিলো তার উজ্জ্বল মুখ
অন্ধকারে ঘুমিয়েছিলো ক্লান্ত বাংলাদেশের শরীর,
ঠিক সে সময়ও তোমার বুকে উত্তরণের স্ফীত আলো-
দাউ দাউ পুড়ছে স্বাধীনতা নামের শেষ শব্দাবলী!
তুমি ভাবতেও পারোনি
বিস্ফারিত চোখে কেবলই বিস্ময়,
তুমি অজস্র হায়েনা পুষেছিলে রক্তের দামে!
টুংগিপাড়ায় মিটমিট করে জ্বলছিলো
বিমূর্ত আধো-আলো এক লন্ঠন!
বাংলাদেশ নিঃসাড় পড়ে থাকে রক্তাক্ত সিঁড়ি, নিগমবদ্ধ,
নিঃশ্বাসের কোন শব্দ ছিলোনা তখন,
ধূসর আলো জাগার আগেই বত্রিশ নম্বর পেরিয়ে
স্থির, ধীরলয়ে বেরিয়ে গেলো
সাড়ে সাত কোটী মানুষের প্রাণ।
আদিগন্ত অপূর্ণ স্বপ্নেরা আজ নীরব শুয়ে আছে-
22 ডিগ্রি ৫৪ মিনিট ১৫.২৯ সেকেন্ড উত্তরে
এবং ৮৯ ডিগ্রি ৫৩ মিনিট ৫৬.১১ সেকেন্ড,
দক্ষিণে-অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশে
টূঙ্গিপাড়ায় বাংলাদেশের কবর।