একলা ভ্রমণ নষ্টমায়ায়
তোমার তামাটে গায়ে যখন আষাঢ়ে বৃষ্টির ফোটা
বুকের ভেতর তোলপাড় আকাশ ভাঙা বজ্রপাত
তোমার ঠোঁট যখন চৈত্রের শুকনো ফালি ফালি মাঠকবিতা
বর্ষার জলে তার ভিজে না কাঙ্ক্ষিত বিশ্বাস।
সুখ ছুঁই, ছন্দে বিগলিত হেমন্তের ঝিরঝিরে বাতাস
তোমার সাথে হেলেদুলে বিরামহীন নগর হাটে
আমার কাছে উদাসীন নষ্ট সময় সঞ্চয় থাকে
তোমার বুকের গন্ধ মেখে আমি শুধু বিষণ্ণতা তাড়াই।
শীতের শরীর উত্তাপ খোঁজে মেহগনি পালংকে
তুমি যেন জানালা ভাঙ্গা এক পশলা বুনো বাতাস
আছড়ে পড়ে পূর্ণিমার ধবধবে বিশ্বাসের চাদর
সারারাত উলটপালট বিধ্বস্ত আয়োজন।
আকাশে উড়ো তুমি নাগালের বাহিরে,
মেঘে মেঘে খেলা করো তবুও সারাবেলা নক্ষত্রের আলো
কাঞ্চনজঙার কুয়াশায় দেখি তোমার মুখচ্ছবি
উজ্জ্বলতর পূর্ণিমার অবয়ব, তোমাতে লুকায় বিস্ময়।
বর্ষার জল খেলে কদমফুল বিছানো পথে
যেখানে তোমার কদম ছুঁয়ে যায় দুরন্ত উল্লাসে।
কোথায় কোন পাপড়ি হেলানো অঘ্রাণের ধানের শীষ
জেগে ওঠে কল্পিত মায়ায়, তোমার ঘরে ফেরার অপেক্ষায়।
বিশ্বাস ভাঙে ঘরদোর, ভাঙে প্রকৃতির ক্লান্ত প্রহর
তোমাকে ঘিরে বাস করে আমার অনাদি অবসর।
বসন্তের কোকিল ডাকে, ফাগুনে কৃষ্ণচূড়া পরাগ মেলে
তবুও যেন শেষ হয়না বিষণ্ণতায় প্রতারিত সময়।
হায়রে আমার উদাস প্রান্তর প্লাবিত বন্যায়
ঘরে ঢুকে কেউটে সাপেরা, আমাতে বাস করে সংশয়।
তোমাকে সঞ্চয় করি জীবন উদাসীন পালিয়ে বেড়ায়
বিলুপ্ত পাহাড় ধ্বসে আমাকে বের করে ঘরহীন পথে ।
তবুও বেঁচে থাকি, তবুও তোমার মাঝে বিন্যাস্ত সাশ্রয়
ঝড়, বৃষ্টি কিংবা খরায় পোড়া শরীর জলে ডোবা পুকুর
পাঁজর ভাঙা হাড়ের ভেতর বৈশাখী ঝড় মাতাল হাওয়া
আমি আছি, ঘরহারা ঘর পথের ধারে আপনছাড়া!
সব ঋতুতে বাঁধন হারা একলা ভ্রমণ নষ্ট মায়ায়।
Leave a comment