আমরা যখন পাহাড়ি পথভেঙে উপরে উঠছি,
আকাশ ততটাই নীচে নেমে আসছে,
তিস্তা, মহানন্দা তলিয়ে যাচ্ছে, যেন এক চিলতে নালা।
আমরা যখন উপরে উঠছি;
আমাদের আপ্যায়নে পাহাড়ের করোটিতে দাড়িয়ে থাকা বাতাসিয়ালুপ,
কুয়াশার চাদরে ঢাকা মেঘের উরুতেই জেগে ওঠে
চাঁদ পলাতক কিশোরীভোর।।
বাতাসিয়ালুপ হেলিয়ে আছে মহাশূন্যে,
আমরা যেন নভোচারী, হিমেল বাতাসে ভাসছি
আলিঙ্গনে কুহেলীর শরীরগলা জলদকুয়ো
এমন দেখিনি কোথাও, হৃদয়ের উষ্ণতায় অভিক্ষিপ্ত স্বপ্নমায়া।
বিশ্বায়নের সকল চমৎকৃত উপাদেয় নিয়ে
উন্নতশির প্রকৃতির নির্যাসে উপগত মেঘালয়ের স্তন।
আমরা যখন উপরে উঠছি;
আলো-তাপহীন দুপুরের ক্লান্ত রোদ ওপাশ ফিরেছে
ঘোমটার আড়ালে
এ যেন আমারই উদাসীন মৌসুমি লন্ডন শহর।
বিস্মিত দুচোখে দেখছি দুরে কাঞ্চনজঙ্ঘা, মাউন্ট এভারেস্ট,
চুমলরি শ্বাসরুদ্ধ সুউচ্চচুড়ায় অক্সিজেন মানেই রডোডেনড্রন,
ফার্ন, প্রিমুলা আর ম্যাগনোলিয়ার নিসর্গে হারিয়ে যাওয়া
হিমালয়ের হিমেল হাওয়া।
শত বছর ধরে বাতাসিয়ালুপের স্নায়ুকোষ ভেদ করে চলন্ত সর্পিল ট্রেন,
৩৬০ ডিগ্রীতে ঘুরে ঘুম-ষ্টেশন, তারপর পিস প্যাগোডা।
থমকে গেছে সময়, ভুলে গেছি বেঁচে থাকার সকল দায়,
নাগরিক শৃঙ্খলিত জীবন পিছন ফেলে
সাত হাজার ফুট উপরে বাঁধভাঙা পূর্ণিমার তরী ভাসিয়েছি।
আপাতত: আমরা ৩২ ডিগ্রি সেলিসয়াস ডিঙিয়ে
জিরো ডিগ্রিতে অবস্থান করছি।
একমুঠো স্বপ্নময় পরিধিজুড়ে লাবণ্যময়ী দার্জিলিং,
যে দিকে চোখ রাখো প্রকৃতির রমণীয় শরীরজুড়ে বিস্ময়…
ক্লান্তি দুর করতে এখানেই বুঝি লুকিয়ে আছে মানস সরোবর।

Leave a comment

Trending